হোমিও চিকিৎসাই ৩ মাসে অভারি সিস্ট দূর করুন
বর্তমান যুগে মহিলাদের একটি গুরুতর স্বাস্থ্য রোগ হল পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS)অনিয়মিত মাসিক থেকে শুরু করে গর্ভাবস্থার সমস্যা সহ নারীদের অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। পিসিওএস সমস্যার পেছনে জিন,পরিবেশ এবং লাইফ স্টাইল পরিবর্তন, পুষ্টিকর খাবারের ঘাটতি-এর মত বেশ কিছু কারণ দায়ী।
পিসিওএস রোগ আক্রান্ত নারীদের কার্বোহাইড্রেট ও চিনি কম খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। আজকের এই আর্টিকেলে ওভারি সিস্ট দূরীকরণ সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করব। তাই এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ওভারিয়ান সিস্ট দুরীকরন সম্পর্কিত
- ওভারি সিস্ট বলতে কী বোঝায়
- ওভারিতে সিস্ট কেন হয়
- ওভারিতে সিস্ট হলে সহবাস করা প্রসঙ্গে
- ওভারি সিস্ট হলে কি বাচ্চা হয় না
- ওভারিতে সিস্ট দূর করার ঘরোয়া উপায়
- ওভারিতে সিস্ট দূর করার প্রয়োজনীয় ব্যায়াম
- ওভারিতে সিস্ট দূর করা করতে ডাক্তারের পরামর্শ
- ওভারিতে সিস্ট দূর করতে প্রয়োজনীয় হোমিওপ্যাথি ওষুধ
- ওভারি সিস্ট দীর্ঘদিন থাকলে শরীরে কি কি ক্ষতি হয়
- পরিশেষে
ওভারিতে সিস্ট কেন হয়
- অনিয়মিত সময়সীমাঃ পিসিওএস রয়েছে এমন মহিলারা ডিম্বাশয় সঠিকভাবে বা একেবারেই ডিম্বটন করতে পারে না কারণ ডিম্বাশয় সিস্টগুলি প্রতি মাসে জরায়ুর আস্তরণ গুলি ছড়িয়ে দেওয়া থেকে বিরত করে। সহ মহিলারা বছরে ৮ পিরিয়ডেরও কম পেতে পারেন।
- ভারী রক্তক্ষরণঃকখনো কখনো সিস্ট বাধা হওয়ার কারণে জরায়ু আস্তরণের দীর্ঘ সময় ধরে আপ হয় এবং পুরোপুরি ফাটল ধরে, ফলে সাধারণ সময়ের চেয়ে ভারী হয়।
- চুলের বৃদ্ধিঃ এটি পি সি ও এস এর সর্বাধিক সাধারণ লক্ষণ ৭০ ডিগ্রি শতাংশেরও বেশি মহিলারা মুখ এবং শরীরের অঙ্গ যেমন পেছন,পেট বা স্তনের মতো তুলে বৃদ্ধি রয়েছে বলে জানা যায়।অতিরিক্ত চুল বৃদ্ধি এই অবস্থা হিরসুটিজম বলে
- ব্রণঃ দেহে পুরুষ হরমোনের উৎপাদন তৈলাক্ত ত্বকের কারণ যা মুখ বুক ও উপরের পিঠে ব্রেক আউট করে।
- ওজন বৃদ্ধিঃ পিসিওএস এর আরো একটি সাধারন লক্ষণ। পিসিওএস আক্রান্ত মহিলাদের ৮০ % ওজনের সমস্যা এবং স্থূলকায়।
- পুরুষ প্যাটারনে টাক পড়েঃ মাথার ত্বকে চুল পাতলা হতে শুরু করে এবং পড়তে শুরু করে
- ত্বকের গা ডার্ক হওয়াঃ পি সি ও এস এর কারণে ত্বকের গা ডার্ক প্যাঁচ থাকতে পারে যা ঘাড়ে কুঁচিতে এবং স্তনের নিচে শরীরের ক্রিজ সৃষ্টি করতে পারে।
- মাথা ব্যথাঃ শরীরে হরমোনিয় ওঠানামা কিছু মহিলার মাথা ব্যথাকে ট্রিগার করতে পারে।
ওভারিতে সিস্ট হলে সহবাস করা যায় কি
ওভারি সিস্ট হলে কি বাচ্চা হয় না
আর পড়ুনঃ জরায়ু সিস্ট দূর করার উপায়
ওভারিতে সিস্ট দূর করার ঘরোয়া উপায়
ইস্ট্রোজেন নিয়ন্ত্রণঃ ওভারিতে সিস্ট খাওয়ার অন্যতম কারণ ইস্ট্রোজেন হরমোনের সাম্য নষ্ট হওয়া। ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ বেড়ে গেলে অভিউলেশন অনিয়ম হয় যার ফলে ওভারিতে সিস্ট তৈরি হয়। তাই সিস্ট রুখতে শরীরে ইস্ট্রোজেন ব্যালেন্সের দিকে খেয়াল রাখুন। সয়া প্রোটিন ও প্রসেসড মিট ইস্ট্রোজেন পরিমাণ বাড়াই। প্লাস্টিকের বোতল থেকে জল খেলেও রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ বাড়তে পারে।তাই ডায়েটে যতটা সম্ভব অর্গানিক মিট ও ডেইরি প্রোডাক্ট রাখুন।এতে ইন্ট্রোজেনে সঠিক মাত্রা বজায় থাকবে।
হারবাল উপায়ঃ বেশ কিছু হারবাল জিনিস এন্ড স্ক্রীন সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। হরমোন সঠিক মাত্রা বজায় রাখা, অভিউলেশন নিয়মিত করতে রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে।ডেন্ডি লিওন ও মিল্ক থিসল ইস্ট্রোজেনের সঠিক মাত্রা বজায় রাখে।
ডায়েটঃ চিকিৎসদের মতে অস্বাস্থ্যকর ডায়েট ও অনিয়মিত লাইভ স্টাইল ওভারিয়ান সিস্টেম এর অন্যতম কারণ। ডায়েটে ফল সবুজ শাকসবজি গোটা শস্যের পরিমাণ বেশি থাকলে সিস্ট মোকাবেলা করা সহজ হবে।
ওজন নিয়ন্ত্রণঃ অতিরিক্ত ওজন ও বি এম আই বেশি হওয়ার কারণেও ওভারিয়ান সিস্টে আক্রান্ত হচ্ছেন মহিলারা। মেদ ঝরিয়ে বিএম আপ ২৫ এর নিচে নিয়ে আসতে পারলে ও ওভারিয়ান সিস্ট সমস্যা অনেকটাই কাটানো যেতে পারে।
সাপ্লিমেন্টঃ ডায়েট ও মেদ ঝরানোর পাশাপাশি কিছু ভিটামিন ও সাপ্লিমেন্ট হরমোনের ব্যালান্স ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন ই ,ফাক্সিড ওয়েল, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি তার মধ্যে অন্যতম।
ওভারিতে সিস্ট দূর করার প্রয়োজনীয় ব্যায়াম
ওভারিতে সিস্ট দূর করা করতে ডাক্তারের পরামর্শ
আর পড়ুনঃ ফ্যাটি লিভার দূর করার উপায়
ওভারিতে সিস্ট দূর করতে প্রয়োজনীয় হোমিওপ্যাথি ওষুধ
- ক্যালকেরিয়া কারব
- সিফিলিনাম
- এপিসমেল
- ক্যালকেরিয়া ফ্লোর
ওভারি সিস্ট দীর্ঘদিন থাকলে শরীরে কি কি ক্ষতি হয়
- বাচ্চা না হওয়ার সময় মত
- পেটের দুই সাইডে ব্যথা মাঝেমাঝে
- অনিয়মিত মাসিক
- ঘন ঘন ব্লিডিং হওয়া
- বমি বমি ভাব হওয়া ইত্যাদি।
পরিশেষে
আমার মতামত বর্তমান যুগের ওভারি সিস্ট রোগ হওয়াটা স্বাভাবিকতায় পরিণত হয়েছে।তাই ওভারি সিস্ট হবার আগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে অনেকটা রোগ থেকে মুক্ত হওয়া যায় যেমন পুষ্টিকর শাকসবজি,ফলমূল যথেষ্ট খাওয়া ক্ষতিকর কার্বোহাইড্রেট খাবার গ্রহণ না করা ও চিনির খাবার না খাওয়া ইত্যাদি।কারণ পুষ্টিকর খাবারে ওভারি তার কার্যকলাপ গুলো সঠিকভাবে পরিচালিত করতে পারে আর এই পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ না করলে ওভারি সিস্ট কেন, আরো রোগ হওয়া সম্ভবনা বেড়ে যায়।
মোট কথা সকল রোগের মূলে রয়েছে ভিটামিন সমৃদ্ধ পুষ্টিকর খাবার। তাই ভিটামিন সমৃদ্ধ পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করে শরীর সুস্থ রাখুন এবং শরীরের যত্নে মনোযোগী হন কারণ স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। আর ওভারি সিস্ট হবার পর এলোপ্যাথি চিকিৎসা মেডিসিন গ্রহন না করে বা অপারেশননের ডিসিশনে না গিয়ে সময় নষ্ট না করে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করুন।
lifechange24 এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url