রোগমুক্ত থাকতে ২০ দিনে পেটের চর্বি ও ওজন কমান

পেটের মেদ,আমাদের একটা খুব চিন্তার বিষয় হলেও আমরা এই মেদকে এড়িয়ে চলতে পারছি না। বর্তমান ডিজিটাল সময়ের  আমাদের শারীরিক শ্রম কমে যাওয়া ও অনিয়ন্ত্রিত বা ভুলভাল খাবারের  ফলে পেটের মেদ জমে যা অল্প বয়সে হাই ব্লাড প্রেসার,ফ্যাটি লিভার,ডায়াবেটিস,ওজন 

পেটের চর্বি ও ওজন কমান                                                                              
বৃদ্ধিসহ নানা রোগে  ভুগছি। আমরা জানছি না আর জানলেও মানছি না,একটু যদি নিজের শরীরকে সম্পদ মনে করে পেটের মেদ জমতে না দিই  তাহলে রোগ ছাড়াই প্রফুল্লময়  জীবন  হতে পারে যেটা ভাবলে অনেকটা স্বস্তি পাওয়া যায়। 

পোস্ট সূচিপত্রঃ ঔষধ ছাড়াই পেটের চর্বি কমানো সম্পর্কিত 

পেটের মেদ কমানোর প্রয়োজন কেন

পেটের মেদ কেন কমাবো-যদি কেউ মনে করে তাহলে সে বোকার স্বর্গে বাস করছে। হাই কোলেস্টেরলযুক্ত খাবার, কার্বোহাইড্রেট খাবার,চর্বিযুক্ত মাছ ও মাংস খেয়ে রোগ পুষে বীর বলাটা নিজেকে শিক্ষিত বোকা বলাই  বাহুল্য । তাছাড়া পেটের মেদ,  বর্তমান সময়ে-অল্প বয়সি চেহারার মানুষকে বেশি বয়সি দেখতে  যথেষ্ট ভুমিকা রাখে- যেটা আপনার আমার কারও কাম্য নয়। এটা উপলব্ধি করে যদি নিজেকে পরিবর্তন করতে পারে,  তাহলে সুস্থ জীবনের অধিকারি হয়ে আরামদায়ক প্রফুল্লময়  রোগমুক্ত জীবন গড়াটা সহজ  হবে। তাই পেটের মেদ কমানোর বিকল্প কিছু নেই এবং এর প্রয়োজনীয়তা   অপরিসীম। 
আরো যদি বলা যায়, পেটের  মেদ যদি হয় তাহলে স্বাভাবিকভাবে পেট ফুলে অনেকটা বড় হয়ে যায় যা দেখতে অনেকটা খারাপ লাগে এবং বেশি বয়সও লাগে। তাছাড়া বিভিন্ন প্রকার রোগ যেমন  হাটের, ফ্যাটি লিভার, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি থেকে বাঁচার জন্য পেটের মেদ কমানোর প্রয়োজন।নিজের দৈনন্দিন  কাজে অনেক সময় বাধা সৃষ্টি করে এই পেটের মেদ যেমন  স্বাভাবিকভাবে ঘুমাতে পারা যায় না বা হাঁটতে পারা যায় না বা অল্প কাজেই হাঁপিয়ে যাই। 

পেটের মেদ কমাতে প্রথমে করনীয়

পেটের মেদ কমাটা কঠিন কিছু না। প্রথমত  লক্ষ্য স্থির করা যে, আমি পেটের মেদ কমাবো দ্বিতীয়ত, কিছু খাবারের নিষেধ, তৃতীয়ত হালকা শারীরিক শ্রম যেমন সকালে ৩০-৪৫ মিনিট পায়ে হাটা, রাত ৯.০০-৯.৩০ টার মধ্যে দ্রুত ঘুমানো। এগুলোকে  কঠিন না ভেবে যদি অভ্যাসে  রুপান্তর করা যাই  তাহলে অনেকটা চিন্তা দূরীকরণ বা আলস্যটা কাটা যাই। আরো সহজ ভাবে যদি বলা যায়, আমি যদি লক্ষ্য স্থির নাই করি যে আমি পেটের মেদ কমাবো তাহলে পরের স্টেপগুলো অনুসরণ করা মুশকিল হবে। 

আর দ্বিতীয় স্টেপ খাবার নিষেধ তৃতীয় স্টেপ হল কি কি খাবারে পেটের মেদ বা চর্বি কমতে সাহায্য করে চতুর্থ শারীরিক কিছু ব্যায়াম বা হাঁটা যা  পেটের চর্বি  গলতে  যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। আমরা অনেক সময় এসব ভেবে ভেবে দিন পার করে দেই এসব না ভেবে দ্রুত কাজে লেগে যাওয়াটাই শ্রেয়। আমাদের দেশে পেটের মেদ যে একটা বড় সমস্যা এটাকে কোন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। এইসব পদক্ষেপগুলোকে ভারী বদনা করে ধীরে ধীরে  এক এক করে সামনের দিকে আমাদের অগ্রসর হলে ভারী কাজগুলো সহজ হয়ে যায়

পেটের মেদ কমাটা  কিভাবে শরীরে কাজ করে

আপনি যখন হাই কোলেস্টেরলযুক্ত,চর্বিযুক্ত,যাবতীয় ভাজা পোড়া তেলের খাবার বন্ধ করবেন- তখন আপনার মেদ জমাটা আপতত বন্ধ হবে-তারপর আপনার জমাকৃত মেদ  খাবারে নিয়ম, হালকা কায়িক শ্রম, দ্রত ঘুমানো ইত্যাদি পালন করবেন তখন  মেদ আস্তে আস্তে কমতে থাকবে। মোট কথা অলস বা আরাম শারীরকে  একটু গলাতে  হবে-ঠিক আগুনে জলা মোমের  মত। বর্তমান যুগে আজকাল অনেক  আধুনিক মেশিন বের হয়েছে যেগুলো ভাইব্রেটিং করে হোক আর পেটে  অনেক সময় বেল সিস্টেমের মাধ্যমে  লাগিয়ে হোক এইসব পদ্ধতি গ্রহণ করে অনেক সময় এসব চর্বি ঝরানো সম্ভব হয়।
 
তাছাড়া দ্রুত ঘুমিয়ে রাতে এবং দ্রুত সকালে উঠে অনেক সময় এসব নিয়ম অনুসরণ করে পেটের মেদ অনেক সময় ঝরানো সম্ভব হয়। আমরা যান্ত্রিক যুগে তথ্য প্রযুক্তি কিংবা অন্য কোন যান্ত্রিক নিয়ে চিন্তাভাবনা না করে যদি নিজের শরীরের প্রতি খেয়াল দেই বা নিজের শরীরকে সম্পদ মনে করি তাহলে এসব পদক্ষেপগুলো ভারী কিছু মনে না করে আস্তে আস্তে আমাদের জীবনের পরিচালনা করা দরকার।

কি কি খাবারে পেটের মেদ স্বাভাবিকের থেকে বৃদ্ধি পাই

মেদ বাড়ানো খাবারের নাম শুনলে আমাদের মনে হতে পারে এসব ক্ষতিকর  খাবার তো  আমি প্রতিদিন খাচ্ছি।  ক্ষতিকর খাবারে তালিকা আপনার খাবারের সাথে মিলিয়ে নিন যেমন বাইরের কার্বোহাইড্রেট খাবারের মধ্যে তেলে ভাজা যাবতীয় খাবার,সরাসরি চিনির তৈরি পানীয় এর মধ্যে চা, কফি, কোক  পেপসি ইত্যাদি  পানীয় , চর্বিযুক্ত মাছ মাংস, যাবতীয় নেশা দ্রব্যের মধ্যে সিগারেট, মদ, গাজা, হিরোইন ইত্যাদি।

আমাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে এসব খাবার ছাড়া তো আমরা চলতে পারবো না এটা মনে না করে আমাদের প্রাকৃতিক খাবার গুলোর প্রতি মনোযোগী হতে হবে। শরীর সুস্থ রাখতে গেলে এসব চিন্তা ভাবনা করে আমাদের খাওয়া-দাওয়া জীবনযাত্রার পরিবর্তন করে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। 

কি কি রোগ হবার সম্ভাবনা বাড়ে পেটে মেদ বাড়লে 

পেটে মেদের ফলে অল্প বয়সে আনেক রোগ  হবার সম্ভাবনা বেড়ে যাই। 
  •  প্রথমত, রোগ হিসেবে ধরা  যেতে  পারে হার্ট  ডিজিজ
  •  দ্বিতীয়ত, ফ্যাটি লিভার
  •  তৃতীয়ত, হাই ব্লাড প্রেসার  
  •  চতুর্থত, ওজন বৃদ্ধি যার ফলে বিভিন্ন প্রকারের  বাত 
 যা  অল্প বয়সে আমাদের কাম্য নয়।

আরও পড়ুনঃ দ্রুত লিভারে চর্বি কমানো ট্রিকস 

পেটের মেদ বৃদ্ধির আনুমানিক বয়স

পেটের মেদ বৃদ্ধির আনুমানিক বয়স যদি বলা হয় তাহলে আমরা ধরে নিতে পারি প্রাই ২৫-৩০ বছর বয়স। এই সময় টা যদি আমরা একটু লক্ষ্য করি তাহলে পেটের মেদকে অনেকটা এড়ানো সম্ভব হবে। কারন এই বয়সে আমাদের দৌড় ঝাপ কমে আসে, শারীরিক পরিশ্রম হয় না বললেই চলে। ওই সময় আমাদের ক্যারিয়ার গড়া নিয়ে আমরা ব্যস্ত থাকি।

 এমন ব্যস্ত থাকি যে নিজের শরীরের প্রতি আমাদের কোন মনোযোগ থাকে না কিন্তু আমরা জানি না একবারো হয়ে গেলে কিন্তু অনেক সময় পেটের মেদ কমানো অনেক ঝামেলা হয় যদিও পেটের মেদ কমে যায় কিন্তু পরে অনেক আল সামো বা অলসতা চলে আসে। 

দ্রুত পেটে মেদ কমানো ঘরোয়া ট্রিকস 

দ্রুত পেটের মেদ কমাতে আমরা কে না চাই বর্তমান ডিজিটাল যুগে। নিচে কিছু খাবারের বাস্তব ট্রিকস দেয়া হল
  •  প্রতি দিন  সকালে খালি পেটে কালজিরার তেল ( ঘানির হতে হবে বিশুদ্ধ ) ও মধু (খাটি হতে হবে) ১ চামুচ খেতে পারেন  
  • সকালে ও রাতে  রুটি  এবং দুপুরে ভাত যা খেতেন টার অর্ধেক খাবেন। বিকালে ক্ষুধা লাগ্লে শুকনা  খাবার মুড়ি চিড়া ইত্যাদি  খাবেন।
  • সকাল দুপুর রাতের খাবার প্রতিদিন এক সময় খাবেন। 
  • রাতের খাবার অর্থাৎ রুটি অল্প খাবেন এবং ৭-৮ টার মধ্যে দ্রুত খেয়ে বাকি কাজ করবেন।
  • সকালে তো হাঁটবেন অবশ্যই
  • ঘন ঘন পানি খাবেন এবং ৩ বেলা খাবারের আগে পানি খাবেন। 
  • মাঝে মাঝে শশা খাবেন 
তবে ত্রিক মানার আগে আপনার ওজন মেপে নিবেন। এই প্রক্রিয়া ২০ দিনচলার পর দেখেন ওজন কমে কিনা। কমলে

পেটের মেদ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় ব্যায়াম ও শারীরিক শ্রম 

ব্যায়াম ও  শারীরিক পরিস্রমের কথা শুনলে আমরা আগেই ভয় পেয়ে যাই।অথচ হালকা বায়্যামের মাধ্যমে  পেটের মেদ সারাতে পারি যা একটু মানলে সহজ হয়ে যাই  যেমনঃ
  • রাতে দ্রত ঘুমানো
  • সকালে দ্রুত ঘুম থেকে ওঠা
  • ঘুম থকে উঠে ৩০-৬০ মিনিট হাঁটা
  • হাতে সময় থাকলে পায়ে হেটে কোথাও  যাওয়া
  • প্রয়োজনে কিছু ইয়গা ব্যায়াম করা 
  • সকাল দুপুর রাত এর খাবারের আগে পানি খাওয়া 
 আর কিছু দিন নিয়ম অনুসরন করুন।

আরও পড়ুনঃ খালি পেটে  পেটের মেদ কমাতে মধু ও কালজিরার তেল ট্রিকস  

আমাদের পেটের মেদ কমানোর  বিষয়ে কেন অবহেলা করা

পেটের মেদ যে কতটা ভয়ংকর টা একবার শরীরে  জমে গেলে পরে অসুবিধা বোঝা যাবে। আমদের দেশে  পেটের মেদ বৃদ্ধিকে কোন গুরুত্ব দেয়া হয়না। কারন আমরা  স্বাস্থ্য সচেতন না। আমরা এই বিষয়ে জানিনা আর জানলে মানিনা- এই ফর্মুলাই  চলতে ব্যাস্ত। ভারতের মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন বলেই তাদের রোগ কম হয়। পেটের মেদকে অবহেলার কারন হিসেবে যদি বলা হয় টা হল আমরা স্বাস্থ্যকে  সম্পদ মনে করিনা। অথচ বইয়ে পড়ছি "স্বাস্থ্য ই সকল সুখের মূল"। শিক্ষিত হয়ে আমরা বরাবরই অশিক্ষিত এর মত কাজ করে যাচ্ছি। 

আরো একটি অবহেলার কারণ বলতে পারি সেটা হল যে পেটের মেদ হলে মনে করি যে আমি খুব ভালো আছি বা সুখে স্বাচ্ছন্দে আছি এই ভুল ধারণা নিয়ে বেঁচে থাকতে আগ্রহী কিন্তু পেটে মেদ  জমলে যে কত বিপদ চলে আসবে তা আমরা তা আমরা কল্পনা করতে পারব না বরং রোগগুলোকে স্বাগত জানানো হবে। 

পরিশেষে 

আমরা মতামত, স্বাস্থ্যকে  আমাদের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ মনে করে,  সুস্থ রাখার জন্য মনোযোগী  হতে হবে। ডিজিটাল যুগে শত বাস্ততার মধ্যেও একটা একটা করে যদি অভ্যাস গড়ি আস্তে আস্তে তাহলে আস্তে আস্তে পেটের মেদ কমানো কোন ব্যাপার হবে না । যদি আমরা এইভাবে সামনে  আগাই যে প্রথমে ১০  দিন আমি  আপতত পায়ে হাটা শুরু করি তারপরের ১০দিন খাবারে মনোযোগী  হই এবং কি কি খাবারে মেদ কমে  আর কখন খেতে হবে-

তা জেনে নি তাহলে আস্তে আস্তে আপনার এসব  অভ্যাসে পরিনত হয়ে যাবে । দিনের অন্যান্য কাজের মত আপনার শরীরকে  প্রাধান্য দিন-দেখবেন এসব নিয়ম কানুনমানলে , পরে মন খুব ভাল থাকবে এবং নিজেকে গর্বিত মনে হবে যে আমার শরীর তো  ফিট রয়েছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

lifechange24 এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url